জুন 7, 2023
দিনের কখন কোন কাজটা করা উচিত, দেহঘড়ি অনুযায়ী মানছেন কি?

দিনের কখন কোন কাজটা করা উচিত, দেহঘড়ি অনুযায়ী মানছেন কি?

দিনের কখন কোন কাজটা করা উচিত, এর একটা প্রাকৃতিক নিয়ম আছে। দেহঘড়ি (বডি ক্লক) অনুসারে সেটি পরিচালিত হয়। বিবিসির প্রতিবেদনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখুন তো, আপনি দেহঘড়ি কতটা অনুসরণ করেন?

১. ভোর ৬টা থেকে সকাল ৮টা ৫৯

এই সময় আপনার হার্ট সবচেয়ে দুর্বল থাকে। রক্তনালিগুলো তুলনামূলকভাবে অনমনীয় থাকে। আর রক্তচাপ থাকে সর্বোচ্চ। এই সময় ঘুমের জন্য দায়ী হরমোন মেলাটনিনের নিঃসরণ বন্ধ হয়ে যায়। এই সময় শরীরচর্চা না করাই ভালো।

২. সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা ৫৯

এই সময় আপনি সম্ভবত অফিসে। এ সময় আমাদের শরীর কাজ করার মুডে থাকে। তবে সর্বোচ্চ পরিমাণে নিঃসৃত হয় স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল। এটা আমাদের সতর্ক থাকতেও সাহায্য করে। দুপুরে খাবারের আগপর্যন্ত আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়তে বাড়তে সর্বোচ্চ হয়ে যায়। তবে এই সময়ের স্মৃতি আমাদের সবচেয়ে কম মনে থাকে। এর অন্যতম কারণ, এটা ‘শর্ট টার্ম মেমোরি’রও সময়। এই সময় আপনার উচিত ব্যস্ত থাকা।

৩. দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা ৫৯

দুপুরের খাবারের পর আমাদের পেট ভরা থাকে। এই সময় গ্যাস্ট্রিকজনিত কার্যক্রম বাড়ে। এটা গাড়ি চালানোর জন্য সবচেয়ে খারাপ সময়। বিশ্বে যত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার বেশির ভাগই বেলা ২টা থেকে ৩টা—এই সময়ের মধ্যে। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষেরা এই সময় রাস্তায় মারা যান। এই সময় মদজাতীয় কোনো কিছু খাওয়া উচিত নয়। কেননা অন্য সময়ের তুলনায় এই সময় অ্যালকোহল বেশি ‘চড়ে বসে’।

৪. বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা ৫৯

এটি শারীরিক পরিশ্রমের জন্য সেরা সময়। এই সময় শরীরের তাপমাত্রা সবচেয়ে বৃদ্ধি পায়। হাঁটা বা ‘ওয়ার্ম আপ’ জাতীয় ব্যায়াম আপনি করতেই পারেন। এই সময় হার্ট ও ফুসফুস সবচেয়ে ভালো থাকে। শরীরের মাংসপেশিও শতকরা ৬ ভাগ শক্তিশালী থাকে। অনেকেই এই সময় দৌড়ে বা ‘অ্যাথলেটিক’ কিছু করে রেকর্ড গড়েছেন।

৫. সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা ৫৯

এই সময়ের যত শুরুর দিকে আপনি রাতের খাওয়া সেরে নেবেন, তত ভালো। যত দেরি করবেন, তত খারাপ। অর্থাৎ সন্ধ্যা ৬টায় যদি রাতের খাবার খেয়ে নেন, সবচেয়ে ভালো। ৮টা ৫৯–এ খেলে বেশ দেরি হয়ে যায়। তবে এই সময়ের মধ্যে ভারি কিছু খাওয়া যাবে না। এটি নিজেকে নিয়ে ভাবার জন্য ভালো সময়।

৬. রাত ৯টা থেকে রাত ১১টা ৫৯

এই সময় ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন নিঃসৃত হতে থাকে। শরীরের তাপমাত্রা কমতে থাকে। ঘুমিয়ে পড়ার সেরা সময়।

৭. ১২টা থেকে রাত ২টা ৫৯

এই সময় স্লিপ হরমোন মেলাটোনিন সর্বোচ্চ পরিমাণে নিঃসৃত হয়। এর মানে এই সময় আপনার গভীর ঘুমে থাকার কথা। সারা দিনে মস্তিষ্ক নানা কর্মকাণ্ডে যত দুশ্চিন্তা জড়ো করেছে, এই সময় সেগুলো সব ধুয়েমুছে যায়। এই সময়ও আপনার মস্তিষ্কের বেশ কিছু অংশ কার্যকর থাকে। তবে এই সময় আপনার মনোযোগ থাকে সবচেয়ে কম। তাই রাতের পালায় এই সময় ইন্ডাস্ট্রিয়াল দুর্ঘটনা হওয়ার আশঙ্কা থাকে সবচেয়ে বেশি।

৮. রাত ৩টা থেকে ভোর ৫টা ৫৯

এই সময় শরীরের তাপমাত্রা সবচেয়ে কম থাকে। অ্যাজমা এটাকের আশঙ্কা বেশি থাকে। এটি স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা প্রসবের সেরা সময়। যদিও এই সময়ও স্লি হরমোন মেলাটোনিনের নিঃসরণ সর্বোচ্চ থাকে। এই সময় ‘ক্ষয়পূরণমূলক কার্যক্রম’ (রিপেয়ারিং অ্যাকটিভিটি) যেমন: কোথাও কেটে গেলে সেরে ওঠা, নতুন চামড়া ওঠা—এগুলো বেশি হয়।