তৃতীয় দফায় ২৮ নভেম্বর কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। তবে ভোটারদের মুখে মুখে মগনামা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ প্রার্থী নাজেম উদ্দিনকে নিয়েই সব আলোচনা। তাঁর নৌকা প্রতীকে ভোট পড়েছে মাত্র ১৪৫টি। হারিয়েছেন জামানতও।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মাত্র ২৫ ভোটের ব্যবধানে মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনুছ চৌধুরী। ঢোল প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৫ হাজার ২৭০ ভোট। নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ পেয়েছেন ৫ হাজার ২৪৫ ভোট। আওয়ামী লীগ প্রার্থী নাজেম উদ্দিন পেয়েছেন ১৪৫ ভোট। জানতে চাইলে জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়া আওয়ামী লীগ প্রার্থী নাজেম উদ্দিন বলেন, ‘ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছেন। দলের নেতারা কেউ নৌকার পক্ষে কাজ করেননি। স্থানীয়ভাবে দলের কোনো সহযোগিতা আমি পাইনি, যার ফলে নৌকার এমন ভরাডুবি।’
দলীয় সূত্র জানায়, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একজোট হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনুছ চৌধুরীর পক্ষে লড়েছেন। উদ্দেশ্য, বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শরাফত উল্লাহকে ঠেকানো।
তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খাইরুল এনাম, সাধারণ সম্পাদক রশিদ আহমদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সুলতান মোহাম্মদ, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মনছুর আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ উদ্দিনসহ অনেক নেতা-কর্মী ইউনুছ চৌধুরীর ঢোল প্রতীকের পক্ষে শুরু থেকে কাজ করেছেন। এতে নৌকার সমর্থক ভোটাররা বিভ্রান্ত হন। দলের তৃণমূলের কর্মীরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। নৌকার বিপক্ষে অবস্থান প্রসঙ্গে মগনামা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সুলতান মোহাম্মদ বলেন, নৌকার প্রার্থী নাজেম উদ্দিন নৌকা প্রতীক পেলেও দলের নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করতে পারেননি তিনি। তাঁর এক ভাই ইউপি সদস্যপদে নির্বাচন করেন। নৌকার চেয়ে তাঁর ভাইয়ের জয় নিশ্চিত করাই ছিল তাঁর মুখ্য উদ্দেশ্য। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। নৌকার ভরাডুবি ঘটেছে।
মগনামা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খাইরুল এনাম বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী নাজেম উদ্দিন একজন জনবিচ্ছিন্ন মানুষ। আমি নিজ উদ্যোগে দলের নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করে নৌকার পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু জনগণ তাঁকে (নেজামকে) ভোট না দিলে আমাদের করার কীই–বা থাকে।’